অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus) জন্য সক্রিয় হলেন ওবামা-হিলারি যেসব কারণে

Dr. Muhammad Yunus


ইউনূস ওবামা ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
যারা যারা অধ্যাপক ইউনূসের (Dr. Muhammad Yunus) পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন তাদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অন্যতম।

Article information

Author,BBC news
২ ঘন্টা আগে
আন্তর্জাতিক ভাবে ' চাপ বাড়ছে শেখ হাসিনার সরকারের উপর শান্তিতে নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি বন্ধের' জন্য। অধ্যাপক ইউনূসের পক্ষে গত এক সপ্তাহে বিবৃতি এইটা ইঙ্গিত করে।

কেন হঠাৎ করে  অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus) ইস্যুতে সোচ্চার হয়ে উঠলেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রথমে অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus) প্রশংসা করে একটি ব্যক্তিগত চিঠি দিয়েছিলেন । একদিন পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি খোলা চিঠি দিয়েছেন বিশ্বের ১৬০জন গুরুত্বপূর্ণ ও সুপরিচিত ব্যক্তি অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহবান জানিয়ে । যেখানে বারাক ওবামাসহ একশ'র বেশি নোবেল বিজয়ী রয়েছেন।

শুধু খোলা চিঠি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের হিলারি ক্লিনটন একদিন পরে অধ্যাপক ইউনূসের পাশে দাঁড়াতে তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে আহবান জানিয়েছেন।

গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা আগে থেকেই চলমান ছিল শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে। নতুন করে আরও আঠারটি মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে, যেদিন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের খোলা চিঠি প্রকাশ পায় সেদিন ।

অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus)

Dr. Muhammad Yunus


ইউনূস ও হিলারি
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,

মনে করা হয় অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus) সাথে ভালো যোগাযোগ আছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের।
অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে উদ্বেগ কেন?
আরও দুটি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ওই খোলা চিঠিতে অধ্যাপক ইউনূসের বিষয়টি ছাড়াও । তারা জানিয়েছেন , আগামী নির্বাচনের দিকে তাদের নজর থাকবে বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন তারা কারন বাংলাদেশের আগের দুটি নির্বাচনের বৈধতার সংকট আছে ।

বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “অধ্যাপক ইউনূস(Dr. Muhammad Yunus) একজন বৈশ্বিক সেলেব্রিটি এবং সে কারণে বিশ্বজুড়ে অনেক প্রভাবশালী বন্ধু তাঁর আছে যানিয়েছেন ওয়াশিংটন-ভিত্তিক উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান ”।

"আমি মনে করি অধ্যাপক ইউনূস তার বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ তিনি জানেন তার পক্ষে এসব বড় বড় নামগুলোর একটি শক্ত প্রভাব আছে। সেজন্যই তার প্রভাবশালী বন্ধুদের এক জায়গায় এনেছেন তাদের সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে । সরকার এখন চাপে পড়েছে বিশেষ করে চিঠিটি গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হওয়ায়"।

"বাংলাদেশের গণতন্ত্রহীনতা ও সুশাসনের অভাব থাকায় অধ্যাপক ইউনূস ন্যায়বিচার পাবেন না বলে আন্তর্জাতিক মহলে একটি উদ্বেগ ও ধারণা আছে" বিবিসি বাংলাকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব পলিটিক্স এন্ড গভর্নমেন্টের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ ।

প্রফেসর রীয়াজ আরো বলেন "বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা উদ্বিগ্ন এখন , অধ্যাপক ইউনূসকে শাস্তি দেয়ার চেষ্টা দৃশ্যমান হওয়ায় তার পাশে দাঁড়িয়েছেন," ।

বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
'আত্মবিশ্বাস থাকলে বিবৃতি ভিক্ষা করতেন না' অধ্যাপক ইউনূস(Dr. Muhammad Yunus) - শেখ হাসিনা
২৯ অগাস্ট ২০২৩
আদালতে নতুন মামলা, গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ইউনূসের পক্ষে খোলা চিঠি,
২৯ অগাস্ট ২০২৩

শেখ হাসিন বললেন, আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না
৩ জুন ২০২৩

অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus)

ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,
অধ্যাপক ইউনূস (২০১৬ সালে নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে)

'সেলেব্রিটিদের ব্যবহার করেছেন অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus)'

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অধ্যাপক ইউনূস ইস্যুটিকে 'আইনগত ব্যাপার' হিসেবে তুলে ধরতে চাইলেও পশ্চিমা বিশ্বে সেটি খুব একটা গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, অধ্যাপক ইউনূস ‘ধারাবাহিক বিচারিক হয়রানির শিকার হয়েছেন’।

ক্ষমতাসীনরা মনে করে, 'আইনগত ব্যবস্থা থেকে নিষ্কৃতি' পাবার জন্য অধ্যাপক ইউনূস আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তৎপরতা চালাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন " অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus) জানেন তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ যথার্থ এবং সে কারণেই উদ্বিগ্ন হয়ে ব্যক্তিস্বার্থেই তিনি তার বন্ধু সেলেব্রিটি ব্যক্তিদের ব্যবহার করেছেন," ।

সম্প্রতি কূটনীতিকদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন মি. মাহমুদ আওয়ামী লীগের দলের সদস্য হিসেবে ।

“কেউ যদি ট্যাক্স ফাঁকি দেয় আর শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ করে এবং সেই শ্রমিকের পক্ষে শ্রম আদালতে মামলা হলে তার কিছু করার নেই” বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মঙ্গলবার ।

মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে তার কিছুই করার নেই, খোলা চিঠির আহবান প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন শেখ হাসিনা । বরং তিনি অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো যাচাই করার পাল্টা আহবান জানিয়েছেন বিবৃতি দাতাদের বিশেষজ্ঞ পাঠিয়ে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা
Sheikh Hasina

ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,

অনেকবারই অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ।

নির্বাচনের সাথে যোগসূত্র?
শেখ হাসিনার সরকারের উপর আমেরিকার চাপ এখন দৃশ্যমান বাংলাদেশের আগামী সাধারন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য । বর্তমান বাংলাদেশ সরকার অস্বস্তির ভেতরে দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ।

ক্রমাগত যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন প্রেক্ষাপটে অধ্যাপক ইউনূস ইস্যুটি সামনে আসলো।

পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন , বারাক ওবামা ও হিলারি ক্লিনটনের মতো ব্যক্তিদের অধ্যাপক ইউনূস ইস্যুতে সোচ্চার হওয়া - এ দুটো বিষয়ের মধ্যে 'অনানুষ্ঠানিক যোগসূত্র' থাকতে পারে।

যদিও আওয়ামী লীগ নেতা মি. মাহমুদ বলছেন, বিবৃতি দাতাদের মধ্যে আলোচিতরা সাবেক যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতিক নেতারা তাদের ব্যক্তিগত ইস্যুতে কথা বলছেন, যার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সম্পর্ক নেই আমার মতে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বারাক ওবামা ও হিলারি ক্লিনটনের মতো ব্যক্তিত্বরা প্রশাসনিক ক্ষমতায় না থাকলেও তাদের মতামতের গুরুত্ব এবং প্রভাবও আছে, বলেন আলী রিয়াজ।

“ বাংলাদেশের সরকারের দেখা উচিত তারা অধ্যাপক ইউনূসকে হয়রানি করছেন কি-না। বাংলাদেশের নির্বাচন কতটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে বিষয়টি মানতেই হবে যে পরিস্থিতি যেদিকে যাক। আর এ পরিস্থিতি এক দিনে তৈরি হয়নি। বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি, এ কারণেই হয়তো বিবৃতিটা এখন এসেছে,” ।

অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus)পড়ুন আরও খবর:

অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus)
ছবির উৎস,GETTY IMAGES
ছবির ক্যাপশান,

আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত গ্রামীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের জন্য অধ্যাপক ইউনূস। ছবিটি ১৯৯৭ সালের।

সরকারের উপর চাপ তৈরি?
নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা সরকারের উপর যে চাপ তৈরি করেছে সেটির জবাব দিতে চায় বাংলাদেশ সরকার, ক্ষমতাসীন দলের ভেতরে অনেকে মনে করেন,। অধ্যাপক ইউনূস বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার একটি কারণ হতে পারে, তিনি যেহেতু পশ্চিমাদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ।

সম্প্রতি অধ্যাপক ইউনূসের চলমান মামলার বিচার প্রক্রিয়া যেমন দ্রুততর হয়েছে তেমনি নতুন করে আরও মামলাও হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

মি. রিয়াজ বলছিলেন “ অধ্যাপক ইউনূসে মামলা সমূহের অগ্রগতি ও নিষ্পত্তির বিষয়ে তাড়াহুড়াটা পরিষ্কার ভাবে বোঝা যাচ্ছে করণ এই বিষয় নিয়ে মি. রিয়াজও এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই বিষয় নিয়ে বিবৃতি দিতে গিয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও অবগত করেন । ”

Read more অধ্যাপক ইউনূসের(Dr. Muhammad Yunus)

No comments:

Post a Comment

Featured Post

Diabetes Medications Demystified: A Comprehensive Guide to Managing Type 2 Diabetes

Introduction Inside this Article: Understanding the Basics of Type 2 Diabetes Definition and Background Key Components and...

Trending: